17 Dec, 2016 * Editor: Dipankar Dutta * Email: deepankar_dutta@yahoo.co.in * Mobile: 9891628652 * Delhi

Dipankar Dutta is no more. We pray that may his soul rest in peace.

রাদ আহমদ



বিষণ্ণতা সিরিজ

“Depression is like a woman in black. If she turns up, don't shoo her away. Invite her in, offer her a seat, treat her like a guest and listen to what she wants to say.” - Carl Jung

১)
বিষণ্ণতা বলতে চাচ্ছে মুঠি মুঠি বৃষ্টির উপর রৌদ্র যেভাবে ঝলকায়
সেটাকে জানালা দিয়ে টেনে আন

সরবতার একাকী চেহারাটা যেন একজন অটিস্টিক শিশু
খুব তাড়নায় - কিসের তাড়না - বলতে চাচ্ছে

‘এইভাবে চিত্রগুলা ছিন্ন ভিন্ন কর’
ছুরি সহকারে মাতো অর্থময় উল্লাসে প্রতিটা কড়ি গুণ
একেকটা মার্বেল ভরে নিয়ে পকেটে সিলাই কর
চেক চেক শার্টে হাত দিয়ে চাপ দিয়ে ঠিক কর

এরপরে বিষণ্ণতা বলল, ‘আমার যেহেতু অর্থের যোগান
পুরাপুরি ঠিক নাই - আপনি সম্পূর্ণভাবে
আমার অবস্থানটা ঠিক বুঝতে পারবেন না’
এই কথা শুনে পর আমার তো আর তেমন
কিছু একটা বলার থাকেনা কেননা মুহুর্তটাই
এমন যে; এ মুহুর্তে সাবলীল ভাবে অর্থের যোগান
একটা হৃষ্টপুষ্ট মাছ যেরকম আনাগোনা করে আমি
মরিচের গুঁড়া ও হলুদ মেখে কড়া করে

ভাজা পোয়া মাছটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম

বিষণ্ণতার দ্বিতীয় কথায় সম্বিৎ ফিরে পেয়ে :
‘কেন সেইদিন ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে এয়ারপোর্টের ভি.আই.পি.
লাউঞ্জে গিয়েছিলেন?’ -আমি বলি

আমাকে আপনি করে বলছেন কেন - আমি তো তখন শিশু
আর তাছাড়াও, সেই সময়গুলাতে আমার নিজস্ব ইচ্ছা বলে
কিছু ছিলনা - সে বলল - ওই সকালেই বৃষ্টির তেড়ছা ধারাতে তোমার
ভাগ্য বর্ণিত হয়েছে একজন ঝিরিঝিরি আঁকিবুঁকি তন্বী মানুষীকে তুমি -

ক্লিষ্টতায় ভরাবার কথা আর বলা লাগেনা তারা তো
ধানমন্ডির উঁচা উঁচা গাছের ছায়ায় অনভিজ্ঞ হাতে ধরানো সিগারেটের
ধোঁয়াতে অস্পষ্ট চেহারায়
‘তীব্র বেদনার তুমি কী দেখেছ’ - আমি বিষণ্ণতাকে এ কথা বললে পরে দেখি
সে নিবিষ্ট আচ্ছন্নতা মেখে কী এক ভাবনায় জানালার গ্রিল পরিষ্কার করে যাচ্ছে

এই পাড় থেকে তার বুকের ক্লিভেজ দেখা যাচ্ছে

বিষণ্ণতা একজন লম্পট ব্যক্তিতে পরিণত হল যেন
উড়ুতে শুকিয়ে যাওয়া স্পার্মের দাগখানা
লুঙ্গিতে লুকিয়ে রেখে নটি বাড়িটার দিকে হাঁটা দিয়ে দিল
যার ঠিক সামনেটাতে পরোটার দোকান - যেখানে
দেদারসে পরোটা ভাজা হচ্ছে


২)
শব্দটাকে বিষণ্ণতা না বলে বরং অনাসক্তি বলা যেতে পারে।

ডিপ্রেশন হল গিয়ে এমন কিছু বর্ণের সম্ভারিত দৃশ্যপট
যেখানে ঔষধের প্রেসক্রিপশন নিয়ে তুমি
অসুস্থতা নিয়ে তুমি আনন্দ সিনেমা হল – তার পিছটাতে
লুক্কায়িত ছোট্ট গলি আছে না? লোকাল মানুষেরা বাদে
যেটা প্রায় কেউই চেনে না – তো সেখানে যখন
শুক্রবার শুক্রবার করে আয়েশি ভঙ্গিতে আড্ডা দেওয়া হয়
পরোটা, চা – এসবের লুক্কায়িত পাশটাতে বসে
লোকাল মানুষেরা ও প্রৌঢ়েরা মূলত হালকা চালে
আধা হাস্যরস আধা বিতৃষ্ণা বা মেজাজ খারাপ থেকে পরচর্চা
বা পরনিন্দার মধ্য দিয়ে ডাক্তারের কাছে তুমি
সুস্থ হতে চাচ্ছ তুমি মাথাগুলা ও মাথার মধ্যেকার ক্লান্ত
নিউরন গুলা অল্প অল্প অগ্রসর হয়ে থেমে থেমে যাচ্ছে
একখানা কাক এ শহরের পঞ্চম তলার
সাদা বিল্ডিঙের জানালার পাশ বাদে অন্য কোনও নিঃসঙ্গতা পাচ্ছেনা যে তার
যন্ত্রণা প্রকাশ করা বা না করা অনেকের কাছেই তো
মূল্যহীন মূল্যহীন তুমি ছোট্ট মানুষ তোমার
জানালার পর্দা গুলা এক লহমায় খুলে নিয়ে অন্য কাজে মনোনিবেশে সমস্যা হচ্ছে সুতরাং

শব্দটাকে বিষণ্ণতা না বলে বরং অনাসক্তি
বলে দেখতে পার। শুক্রবারের সকালে কাস্টমার সার্ভিসের
মেয়েটার চোখে আঁকা কাজলের টানে সয়লাব হয়ে যাক না যা সমস্ত গলি ঘুপচি
এবং উচ্ছন্ন নিস্ফল ব্যস্ততাগুলা


৩)
তোমার বাচ্চাটি এ্যাবরশন হয়েছে কি হয়নাই – এটাতে উনার দরকার নাই উনি
মনো চিকিৎসার ‘নিউরো’ দিকটা নিয়ে কাজ করেন
তোমার মস্তিষ্কে কিছু জৈব রসের আধিক্য কিংবা অনাধিক্য
জানালা দিয়ে তাকিয়ে উনি সকালের রোদ মেপে উঠে পরা
পরপারে চলে যাওয়া প্রাণ কিংবা এই পাড়ে পড়ে থাকা মৃদু সম্ভাবনা
স্ট্রিপ টিপে টুপে উনি ট্যাবলেট বের করে থাকেন এবং পক্ষান্তরে
তোমাকেও বের করতে বলেন – জানালা দিয়ে
তাকিয়ে আমি তো দেখি রীতিমত বান্দরের কিছু সম্ভাবনা  ঝুলে আছে!
অর্থাৎ পুরানা কালে এ শহরটা চারিপাশে আগ্রাসন যখনও শুরু করেনি
তখনও এমনকি এই এখনও তো কিছু কিছু অংশে দুই কি চারটা

বানর অথবা আরও ছোটকালে আমি এই যে এখানে বসেই
হায়েনার ডাক শুনেছি তো যেটা বলতে চাচ্ছিলাম,

পুরানো সময় কালে যেখানে গহীন বন ছিল সেখানে এখন রাস্তা
সোঁ সোঁ করে করে গাড়ি চলে যায় –দুই ধারে এত বড় বিল্ডিং – যে তার মধ্যিখানে উনার ছোট্ট এ একতলা
অফিসের কথাটাও ভাবতে অবাক লাগে মনে হয় এটা বুঝি ‘সম্ভাবনা’ মাত্র
- সেইখানে দুরু দুরু বুকে যে মুহূর্তে তুমি যাও আমি যাই
হায়েনা ও শেয়ালেরা যায় – আচ্ছা নাহয় বান্দরও যায় - আমরা সবাই গিয়ে দেখি

অফিসের ডালে ডালে সুন্দর সোমত্ত ঝকমকে ট্যাবলেট কিছু শূন্যে ঝুলে আছে


কাঁঠালিচাঁপার ঘ্রাণে উরারা

কাঁঠালিচাঁপার ঘ্রাণে উরারা ঝগড়া করতেছে
সাদা মুরগী কাটা হচ্ছে যখন তখন
লাল কথারা গলির দু ধারে উড়ে যাচ্ছে
বাতাস আনছে নদীর ওপাড় থেকে সুঘ্রাণ
পঞ্চাশ মাইল ওপাড় হতে মানুষজনা ভেসে আসছে
ঝিম মারা সাঁঝে ফুলের ঘেরাণ হৃষ্টপুষ্ট

ঘিয়ের মতন নাকি মাখন
শক্তিশালীর সাথে সাথে সংস্কৃতিটা লেপটিয়ে গেলে
সংস্কৃতি - তা কত সুন্দর কাঁঠালিচাঁপার ঘ্রাণের মতন
রাও করেনা খাড়ায়া থাকে দর্শক যেরকম
সাদা শার্টে লাল রঙা ঘামে ভিজে যাচ্ছে

কাঁঠালিচাঁপার ঘ্রাণে উরারা ঝগড়া করতেছে