17 Dec, 2016 * Editor: Dipankar Dutta * Email: deepankar_dutta@yahoo.co.in * Mobile: 9891628652 * Delhi

Dipankar Dutta is no more. We pray that may his soul rest in peace.

শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়



অসাড়লিপি 


নিজেকে কতবার পালাতে বলেছি, অশ্রাব্য খিস্তির সামনে বারবার জিভে চলে আসা বালি সমেত তাকিয়ে থেকেছি এই না যেতে পারা অসাড়ের দিকে, প্রবল অতীত নিয়ে বদ্ধ দুটি মাত্রার বাক্সে ছটফট করা


যখন অসাড় ওঠে এই দীর্ঘ সূর্যের শহরে সামনে শুধু বারবার কেটে যাওয়া নিউরোনের ফ্যাকাশে সাদা গলিগুলো দিয়ে ঢুকে পড়ে হেলিওট্রোপের গন্ধ, জিভ ও আমাদের মানতের সুতোর ঘিনঘিনে বটবৃক্ষে গিঁথে দেওয়া আমাদের থ্যাঁতলানো জিভে ক্রমাগত অচেনা ভাষা গুঁজে দিয়ে পালায়।

যখন অসাড় ওঠে এই অবশিষ্ট শব্দগুলো কান্নার আগে মুখে ঠুসে দিয়েছে একটুকরো নিভে আসা কাঠ – কিছু ছাইয়ের গুঁড়ো নিজেদের না চিনেই উড়ে বেড়াচ্ছে মগ্ন


অথচ অসাড়ের হাত ধরেই চাষি রমণীর পুরুষ্টু পায়ের চাপে তার আঙোটের রূপোলি ধেবড়ে দিয়েছিল বাসস্টপে, মেট্রো স্টেশনে

যে তীব্র বমিভাব লুকিয়ে হাঁটা এই অসম্ভব যানপ্লাবিত অসাড়ে একধরণের ভাঙা কাঁটাতারে ঘেরা ব্যাকইয়ার্ড খুঁজছো তুমি, কমলা বেড়ালের পালিয়ে যাওয়ার মিশিয়ে দিতে চাইছো সকাল থেকে শুরু হওয়া মাথার যন্ত্রণা


যখন অসাড় ওঠে আর ছড়িয়ে যায় তার রং, সে জৃম্ভনে তুলে নেয় শান্ত খিদের জংধরা ধাতু – আর কিছু নেই শুধু এক বিরাট প্রচেষ্টা নামক হাতুড়ি খণ্ড করে দিতে থাকে পেশি ও সমূহ – আমি ঢুকে আসি নিবিড় চূর্ণে রক্তশূন্য এক সকালের গায়ে লিখে রাখতে চাওয়া আঁচড় ও শেষবারের মত দাঁতে দাঁত চোয়াল শক্ত করা পরিশীলিত ব্যাকরণ


ধেবড়ে থাকা সত্যিগুলো আর কোনও কাজে লাগছে না – শুধু এই ক্রমশ ক্ষয়ে যাওয়া যাতায়াতের শরীরে কেউ মাথা তুলছে না – এক দীর্ঘ মানুষ ও পশুর দলবদ্ধ বিস্ফার সমস্ত গলির বুকে সমস্ত দরজা ও জানলার আলোকছিদ্রের বুকে আটকে আছে অসাড়ের চোখ ধাঁধানো তির


আর কিছুতেই কাউকে ডেকে তোলা যাচ্ছে না, সকলেই সারিবদ্ধ, পরপর অ্যাভেনিউ বৃক্ষ জুড়ে সাজানো রয়েছে বাসন, শব্দ হচ্ছে, পত্রমোচনের কাছে নিয়ম মাফিক সঙ্গম ও শরীরের চাহিদাগুলো দাঁতে ছিঁড়ে আনতে চাইছে স্তনাগ্র, নখের দাগ রেখে যেতে চাইছে সর্বত্র, বিশ্বাস করতে শিখছি প্রশ্নহীন অনুশাসন, দীর্ঘ বালির পথে ছড়ানো থাকছে ধাতব বিন্যাস, দীর্ঘ নদীপথে ভেসে আছে ত্যক্ত নৌকা; এই যাবতীয় দৃশ্যের প্রাকার জুড়ে গড়িয়ে পড়ছে অসাড়ের মোম


অতিকায় ক্যালেন্ডারের শেষ হয়ে আসা দিনগুলোর উপর উলকি করা থাকছে আমাদের যাবতীয় জীবাণুসঙ্কুল কথা; খাদ ও তার পাশে মাথা তুলে দাঁড়ানো রাত্রি নামক কন্দ, সমস্ত নক্ষত্রই জল – তাদের অস্পৃশ্য খোলস; শুধু বাহনের দ্রুতি কাটিয়ে চলেছে দরজা নামক রাস্তার মাঝখানে বসানো কিছু ফাঁপা অভ্যেস