লেখাযুগলেরশব্দ-২
জলের পাশে দাঁড়িয়ে ডাকলে, জলটা অনেকটা নীল, কালো, ধূসর, আকাশী ছাপিয়ে ঝাঁপ দেয় শূন্যে। ওই আঙুলে দোহারায়, একটানা বিরাগ বেজে চলেছে কোন রোদ থেকে। টুকরো আলপনা সিটের কোন ঘেঁষে তোর মুখে তখন মুখোমুখি।
কথা শুনছে শব্দের। হালকা বাতাসে উত্তরে ঘুড়ি একটানা দড়িতে ঝুলিয়ে রেখেছে দোনলা, আর সেই পতঙ্গে কিছু দোল মোড়া ফড়িং আর কয়েকটা হাবিজাবি কুঁড়ি কি করবে পাড় না পেয়ে নৌ-অচেতনে এখন ক্লান্ত। শিরায় তাদের পিঁপড়ে মাতন। হলুদগন্ধা দুধ আর সাদার যুগল বয়নে আধো আধো সকালের দাঁতে তখন স্পষ্ট হচ্ছি আমি। এক পরস্পর থেকে একান্ত ডুবে যাচ্ছে গাঢ় গাঢ় লেহনত্বে, তোরই সুদূর মেরু তখন জল থইথই
লেখাযুগলেরশব্দ-৫
কিছু স্বরযতনের কথা আজও না বলে কিছু ফড়িং। কাঁচের অস্তিত্ত্বে, মাটি আর সময়ের দোনামনা একসময় ভাসিয়ে যায়, পাতার ছেঁড়ায় লিখে রাখা সব আরশিগুলো।
রোদ্দুর নেমে এলে, বারান্দার জঠরে শালিখের ধূপপানের একটানা কষ্টনিঃশ্বাস
হঠাৎ ভাবতে বসে, সেদিন, সেও কুঁকড়ে উঠেছিলো চিলঘরে। এই যে পাতার নিচে এখন গাছটা আড়াআড়ি, অশ্বথ জহরে সে এখনও চারায়। ভাসানির পাড়ে জমা যত শিষগুলো পুড়িয়ে গেছে অনন্দা।
তাল তাল ঘরের শীতে, কারা যখন মুঠোয় আড়ষ্ট নিয়ে, স্কোপের ফাঁক দিয়ে তখনই বেজে ওঠে সওদাগরের বজরা। ডুবন্ত জালে আধফরমা রূপোলী ঘুমে বিছানাটা এখনও আমার চুমুতে।
চুলগুলো সরিয়ে দিলাম, কথা রাখবে কি? ঝরে উঠছে পদ্ম। পাতার নিচে একফলক বর্ণা ইঁট ভাঁটার ছাপ নেওয়া জলে ভাসিয়ে নিয়েছে বদর। আদর সরিয়ে রাখছে, এক হয়ে অনত্র্য.....
পায়ের নিচে ঘোড়ারা থেমে আদৌ ঔদ্ধর্য্যেলেখাযুগলেরশব্দ-৭
এ সময়টা একটা মন মরা ডাক ভাসে, বাঁশির লাঠিতে যেন পাতারা জেগে, দুপুরী ঘামে। অচেনা পাখিগুলো ডালপালা ভরিয়ে। একটাই বিন্দুতে থেমে মেঘরা বার বার সরিয়ে নিচ্ছে আকাশ
ওদের বোধহয় ঘর থাকে ওপারে! ডানা পোষে বাদুর আর কাঁচপোকাদের ঘুমে মিছিল মিছিল হাঁটি খেলে বড় না হওয়া সব গাছ-আগাছাা
আমার খাতার আঁকা ফুরিয়ে এলে মা, ঘন্টা বাক্সের চেনে একটা পিঁপড়ে বলি দেয়, তারপর রুমালের মন্ডলে সেই তিলক চিহ্ন, অন্ধকার বাড়া চোখে, টর্চ খুঁজে খুঁজে মেটায় রেললাইনের সন্ধি!
আমি বড় হয়ে আর কখনও চাঁদ দেখিনী! ছায়াতে আলোর মিছিল নিয়ে মানুষ আর ঘামগন্ধ দেউলিয়া সেদিন ওই আরোহে
শীত জমে উঠছে, ওভার কোটে লকারের তোড়জোড় সেরে, এবার ফুটপাতের গন্তব্য। একহরা আলোর নিচে, ঘুমিয়ে থাকা মুখগুলোকে বিপরীত মনে হয়! দড়িতে তাই বাজি'র ছায়া ফেলে সমস্ত মিটিয়ে চলে
ধার, শার্তিক অনাবর্ষে।অনুচ্চারিনীরকাহিনী-১
শব্দরা ফিরে গেছে, কারাবাসে নতধারি অভিবাস। খোলসের ওপর চিলতে শরৎ ধানী গর্ভে, এখনও চাঁদের দহন মানায় রোদ।
গতকাল, কিংবা কালের চৈত্রে গাত্র পোষানো যত কিগান, হিড়হিড়ে শীতে, বন্দি বস্তার মুখে ফেলে গেছে দ্বাপরের ইস্তাহার। এক য'ফলা পূর্ণিমা নিঃশ্বাস বোধের অবসরে আজ কিছু কুঁড়ি ধরিয়েছে, কলসের ঠোঁটে। ফোঁটা ফোঁটা ফেনায়, একদিন পৃথিবী ঠিক কুড়িয়ে পাবে পাথরের ভগ্নাংশ আর চটির উত্তরাধিকারে আমিও জানব, সময় আসলে এক বির্বসিত নামগান মাত্র। জং ধরা পোষাকে মানুষ খোঁজে নিজেকেই জাত জ্ঞাত সব অভিসারে। কুকুরের ছদ্মনামে ঘুমিয়ে আসছে নির্ভেদ
ভালবাসা কখনও বাঁশফুলের মুখে ছুঁয়ে নিস প্রশ্নহীন সেই সব অস্বীকার। কারোর।
জানিনা ঠিক বলার ছিল, কিংবা কি বলার আছে। খোলামকুচি পুড়িয়ে মাটি ফিরে গেছে অক্ষরযতনে। মঞ্চে সাজানো একে একে চেয়ারগুলো সেজে উঠছে অতিথিজনে। ওই নিচু ফলনের নিচে, মাটি মুড়ে বসে যে ধান্য শিরিষ, ও'র বাঁ পাশের বুকে আজ চওড়া পদাচল। রাস্তা হাতড়ে ট্রেন ছিঁড়ে গেছে ভিড়জাত সমস্ত ক্ষতিপূরণ। একে একে নিষিদ্ধ গলিপথ সার বেঁধে ধরিয়ে নিয়েছে আগুনের পৌষ।
দেখা হবে না জেনেই, পাতার পর পাতা লিখে যাওয়া অন্ধকারগুলো বাদুড়ের খাঁচায় আজ সহজসিদ্ধ। আ! তালু খুলে উড়ে যাচ্ছে পাপড়ি মোড়া সব ধানের ঘর। আমনে আমনে ছেয়ে আছে মাটি মোড়া খরার শীকার্য।
বেড়ে চলুক রাত, ঘন চোখের আড়ালে, ঘুম হতে হতে একসময় থেমে যাবে সমস্ত অবিদায়। শুকনো পাতার নিচে, স্মৃতি সেদিন শুধুই এক ফালি চেরী, রঙিন জলের গন্তব্যে অ্যাকোরিয়াম গুণছে মৃত চেরাইয়ের দাম, মানুষে।
অনুচ্চারিনীরকাহিনী-২
একটা পাখি আর কিছু মধুরেণু। ধরা যাক তার নাম, "নেই"। অচেনা ঠেকছে না বেশ! গালের পাশে তিলের রঙ হালকা বিষাদবর্ণা। মেঘ নামলে, সূর্যাকাশে, গলা মোমের আলো আর চিতায় হইহই করে ওঠে গতকাল।
আমার একটা ছাদ ছিল, একলার। একটা বই ছিল মোড়ার গায়ে, দুটো ঘড়ি আর তিনটে পিঁপড়ে। সিঁড়ি ভাঁজ করতে গিয়ে দেখি, জলের কলটা উল্টে আছে, আর নলগায়ে বয়ে যাচ্ছে মহাশূন্য।
শিষ শিষ পাখিটার একটাও ডানা নেই, চোখও খেয়ে গেছে কবেকার দোনলা। এখন সন্ধ্যামণি ফোটে, সাদা বেড়ার স্তনে ওই! ওইইই যে ওদের জাহাজঘরটা থেমে আছে কবেই! একশো'র ঘুটি শর্তে ভাসিয়ে